jamiatulbalag

সিরাত আরবি শব্দ। অভিধানে যার অর্থ আচরণ, চরিত্র, স্বভাব প্রকৃতি, পদ্ধতি, জীবনচরিত, জীবনবৃত্তান্ত ইত্যাদি। আর এখান থেকেই ‘সিরাতুন্নবী’ একটি বহুল প্রচলিত শব্দ বন্ধনী। সিরাতুন্নবী সা: হচ্ছে, নবীজীর জীবনচরিত। যাতে বিবৃত হয়েছে, প্রিয়নবী মুহাম্মদ সা:-এর পবিত্র জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত। ঘরে বাইরে মসজিদের মিম্বরে; হাটে বাজারে, প্রতিবেশীর সাথে, আপন স্ত্রীদের সাথে, অমুসলিমদের সাথে এবং সাহাবিদের সাথে কোন বিষয়ে কখন কিভাবে তিনি কী আলোচনা করেছেন, জীবনে চলার পথে কিভাবে প্রিয় সাহাবিদের পথনির্দেশনা দিয়েছেন ইত্যাদি। মানবজীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রের বাস্তবসম্মত গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা রয়েছে নবীজীর জীবনচরিতে।
আর একজন আদর্শ মানুষের জীবনাচার হয় সুন্দর ও সুশৃঙ্খল; সৌখিন ও পরিপাটি। পৃথিবীর ইতিহাসে অনুসরণীয় শ্রেষ্ঠ এমন একজন মহান ব্যক্তিত্ব হচ্ছেন আমাদের প্রিয়নবী মুহাম্মদ সা:। এ কথা ঐতিহাসিকভাবে অমুসলিমদের দ্বারাও পরীক্ষিত এবং স্বীকৃত। যে কথা, প্রায় ১৪০০ বছর আগে পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন- ‘তোমাদের মধ্যে যারা আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস রাখে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে; তাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের মধ্যে (জীবনীতে) রয়েছে উত্তম আদর্শ।’ (সূরা আহজাব-২১)
আল্লাহ তায়ালা আমাদের নবীজীকে প্রেরণ করেছিলেন গোটা বিশ্বভূখণ্ডের জন্য। মনোনীত করেছিলেন রহমতস্বরূপ। আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘আর আমি আপনাকে প্রেরণ করেছি বিশ্বজগতের রহমতস্বরূপ।’ (সূরা আম্বিয়া-১০৭)
কাজেই এ কথা বলার সুযোগ নেই যে, নবী মুহাম্মদ সা: শুধু আরব ভূখণ্ডের জন্য প্রেরিত হয়েছিলেন; বরং গোটা জগতের জন্য তিনি হলেন রহমতস্বরূপ। এমনকি মুফাসসিরদের মতে, অমুসলিমদের জন্যও তিনি রহমতস্বরূপ। আর এই নবী মুহাম্মদ সা:-এর স্বভাব ও চারিত্রিক সনদ দিচ্ছেন আল্লাহ তায়ালা এভাবে-‘আর আপনি হলেন মহান চরিত্রের অধিকারী।’ (সূরা কলম-০৩)
নবুওয়ত লাভের আগেই পুরো আরবের অমুসলিম মুশরিকরাও নবীজীকে আল আমিন বিশ্বস্ত বলে সম্বোধন করতেন। নিজেদের মাল-সম্পদ গচ্ছিত রাখতেন তাঁর কাছে। একজন মানুষ কেমন আস্থা বিশ্বাস অর্জন করলে, মানুষ তাঁর ওপর এতটা আস্থা রাখতে পারে? যার ফলে তারা নিজেদের মাল-সম্পদ আমানত রাখতে চায়। বাস্তব কথা হলো, নবীজির কথা কাজ ও মৌন সম্মতি বা সমর্থন তো প্রকৃতপক্ষে মহান আল্লাহরই আনুগত্য। তাই তো এমন ঘোষণা। স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা এই স্বীকৃত দিয়েছেন যে, ‘কেউ রাসূলের অনুগত হয়, নিশ্চয়ই সে যেন আল্লাহরই অনুগত হয়।’ (সূরা নিসা-৮০)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *